গোদনাইলে জ্ঞানের আলো আইডিয়াল স্কুলের নামে প্রতারণা স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন পাঠানটুলী নতুন আইলপাড়া এলাকায় মে ফ্লাওয়ার আদর্শ ক্যাডেট একাডেমী বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সেখানে গড়ে ওঠে জ্ঞানের আলো আইডিয়াল স্কুল নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু জ্ঞানের আলো আইডিয়াল স্কুলের সুচতুর পরিচালক সাইফুল ইসলাম খন্দকার বন্ধ স্কুলের নামে সরকারি বই সংগ্রহ করে নিজ স্কুলের নামে চালিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও সাইফুলের নামে রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য সহ গুরুতর প্রতারণার অভিযোগ। জানা যায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৮নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলী নতুন আইলপাড়া এলাকায় সাহেদুল ইসলাম বাবুর পরিচালনাধীন মে ফ্লাওয়ার আদর্শ কিন্ডার গার্টেন স্কুলটি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সেই স্কুলটি অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে সাইফুল ইসলাম খন্দকার সম্প্রতি জ্ঞানের আলো আইডিয়াল স্কুল গড়ে তোলে। আর তখনই পূর্বের স্কুলের নাম ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জ শিক্ষা অফিস থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বই সংগ্রহ করে। এই বিষয়ে সাহেদুল ইসলাম বাবু বলেন, আমি স্কুলটি বিক্রি করে দিয়েছি। তাই এর দায় দায়িত্ব আমার নয়। বর্তমানে যিনি স্কুলটি পরিচালনা করছেন বিষয়টি তিনি দেখবেন। এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা মোঃ আবু তালেব বলেন বইয়ের বিষয়টি সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল গণি দেখেন। তাই তার সাথে কথা না বলে কিছু বলতে পারছি না। তবে যদি এমন কিছু পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর আমরা চাচ্ছি সকল শিক্ষার্থীই যেন বইগুলি পায়। অন্যদিকে জ্ঞানের আলো আইডিয়াল স্কুলের চৌধুরী বাড়ী বাসস্ট্যান্ড শাখার পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বলেন, সাইফুল ইসলাম খন্দকার ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে এবং অর্থের পিছনে দৌড়াচ্ছে যা দৃষ্টিকটু। ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী না করে বিভিন্ন দিকে ধাবিত করছে। বইয়ের প্রতারণার বিষয়ে শিক্ষা অফিসের আব্দুল গণিকে ফোন দিলে তিনি কল রিসিভ করেন নি। বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাইফুল ইসলাম খন্দকার বলেন, আমরা সঠিক ওয়েতে বই সংগ্রহ করেছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানকে হেয় করার জন্য কেউ ষড়যন্ত্র করছে। এদিকে সাইফুল ইসলাম খন্দকার নিজের অপরাধ ঢাকতে এক সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে নিজের প্রভাব বিস্তার করেন বলেন তিনি তাদের কিন্ডার গার্টেনের বিষয়গুলো দেখেন। তবে সাইফুল ইসলাম খন্দকার ঐ সাংবাদিকের মানসম্মান ক্ষুন্ন করার জন্যই বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানা যায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সাহেদুল ইসলাম বাবুর নিকট হতে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধ স্কুলের বই কিনে নিয়েছে সাইফুল। করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রেখেছে সেখানে অবৈধ ভাবে কোচিং পরিচালনা অব্যাহত রেখেছেন সাইফুল ইসলাম খন্দকার। যার ফলে সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী কমিশনার রেজা মাসুম গোলাম প্রধান কোচিং সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে সাইফুলকে আটক করে নিয়ে যায় এবং ৭ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে সাইফুলকে আবারও ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেন কোচিং বাণিজ্যের জন্য। সাইফুলকে নিয়ে আরও বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে তা ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে। বর্তমানে সাইফুল ইসলাম খন্দকার ও তার জ্ঞানের আলো আইডিয়াল স্কুলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিসকে আহ্বান জানান সচেতন মহল।