সাইফুল ইসলাম,ভেড়ামারা(কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :
দেখতে ছোট-খাটো মানুষ হলেও যার হৃদয়টা বিশাল। মানবতার সেবায় যার হাতটা আরও বড়। সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেন মানুষের জন্য কিছু করার। বলছিলাম ডাক্তার কামরুল ইসলাম মনার কথা। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হোমিওপ্যাথিক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এবং বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সমাজ কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান তিনি।
শেষ পর্যন্ত নিজের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য জমিয়ে রাখা সঞ্চয়পত্রও বিক্রি করে পাশে দরিদ্র, অসহায় ও কর্মহীন; যারা লোক-লজ্জায় কারো কাছে হাত পাততে পারেন না, তাদের ঘরে গিয়ে গোপনে খাদ্য এবং খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়ে চলেছেন তিনি।করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন অায়ের মানুষের পাশে নিয়মিত সীমিত পরিসরে ব্যক্তি উদ্যোগে সহযোগিতা করে চলেছেন।
দল ছাড়াও যে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা তার জলন্ত উদাহরণ। টাকা আছে কি নাই সেটা বড় কথা নয়। করোনার এই মহামারীতে জীবন বাজি রেখে ডাঃ মনা আর্ত-মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। ভেড়ামারা রেলস্টেশনে অবস্থানরত দেশের স্থান থেকে এসে আটকা পড়া, ছিন্নমূল, ও বাস্তুহারা অর্ধশতাধিক ব্যক্তির জন্য বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে খাবার প্রদান করেন নিয়মিত। আর এ কাজে সহযোগিতা করেন তাঁর সহধর্মিনী ডাক্তার শামীমা ইয়াসমিন সীমা। নিয়মিত ৫০/৬০ জনার খাবার নিজ হাতে রান্না করে প্যাকেট করেন তিনি। কোনরকম ব্যক্তিগত প্রটেকশন ছাড়াই প্রতিদিন স্বামী-স্ত্রী রোগি দেখে যা আয় করেন তার সবটুকুই বিলিয়ে দেন বলে তিনি জানান।
দেশব্যাপী চিকিৎসা সেবা এবং দরিদ্র চিকিৎসকদের মাঝেও প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে তাঁর প্রতিষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সমাজ কল্যাণ সংস্থার সদস্যদের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আর্ত-মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। আজ ২১-৪-২০ তারিখেও অসংখ্য পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান লিপটন, জয়যাত্রা টেলিভিশনের ভেড়ামারা প্রতিনিধি ও দ্যা ডেইলি নেক্সট নিউজ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি প্রভাষক সাইফুল ইসলাম।
যারা সমাজে অন্যের কাছে হাত পাততে পারে না, সেই মানুষগুলোর বাড়ীতে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে ডাঃ মনার সাথে নিরলসভাবে শ্রম দিয়ে চলেছেন সাংবাদিক মাসুদ রানা লেবু। মানুষগুলোর অাত্ন-মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে অনেকটা গোপনে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে ফলে ত্রাণ গ্রহিতাদের কোন ছবি তোলা হয়নি।
ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা তার জীবনের সঞ্চিত সবটুকু বিলিয়ে দিয়ে আর্ত-মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে চলছেন। তিনি বলেন, ছোট বেলা হতে আমার স্বর্ণের চেইন পড়ার খুব শখ বলে এ যাবত ১৫ বার চেইন কিনেছি এবং ১৫ বারই মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে রাখতে পারিনি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
জাতির এ দুঃসময়ে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।