স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধীতা করে ১৯৭১ সালে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের ০৯নং ওয়ার্ডের বসুনীয়াপাড়া গ্রামের রাজাকার আঃ মান্নান (৭৭) (পিতা- মৃত রাজাকার আবেদ হাজী রাজাকার তালিকার ক্রমিক নং- ৭৪২) এর অভিযোগ উঠেছে। স্বাধীনতা বিরোধীতা করে স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ড করার পাশাপাশি তার অত্যাচার ও লুটতারাজের মতো জঘন্য অপরাধের সাথে লিপ্ত ছিল বলে অভিযোগ সুত্রে জানা যায়।
১৯৭১ সালে খান সেনাকে নিয়ে এসে তার পিতা রাজাকার আবেদ হাজী ও রাজাকার আব্দুল মান্নান এর যোগসাজশে বর্বরতা নির্যাতনের শিকার হন অনেক মা-বোনের ইজ্জত লুন্ঠিত করে এবং নির্বিচারে চুরি-ডাকাতি, সম্পত্তি দখল সহ মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দেওয়া অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তার গ্রামের শুকারু মামুদ, তার মেয়ে মোছাঃ কাচুয়ানি ও ১৩ মাসের শিশুকে প্রত্যক্ষভাবে খান সেনাকে নিয়ে এসে নির্মমভাবে হত্যা করে।
সেদিনও রক্ষা পায়নি মোশারফ হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে আসা তার দুই বোন ও দুই মেয়ে জামাই, আতাহার আলী, আজিম উদ্দিন এবং মোশারফের বাড়ির কাজের লোক এরফান আলী, ডোঢা মামুদ, রহিম উদ্দিন ওরফে ঘাটাবুরা সহ এর নাতি আব্দুস সালামকেও সেদিন হত্যা করে। এই রাজাকার এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার করে বলে অনুসন্ধানে জানা যায়। বাবা ও ছেলে রাজাকার হয়ে পরিবারের চার জন সদস্য সরকারী চাকরী পাওয়া কিভবে সম্ভব?
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কর্তৃক প্রদত্ত যুদ্ধপরাধীদের তালিকায় আব্দুল মান্নান রাজাকারের ক্রমিক নং- (৮১) বলে জানা যায়।
গত দৈনিক তিস্তা সংবাদে, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও রাজাকার আব্দুল মান্নান এর অত্যাচার অব্যাহত, শিরোনামে প্রকাশিত ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২০খ্রিঃ, ৮ আশিন ১৪২৭ বাংলা, বর্ষঃ ০৩, সংখ্যাঃ ৩১২, পৃষ্ঠা নং- ০৪ এ প্রকাশিত হয়। সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রায় গত কিশোগঞ্জে প্রভাবশালী রাজাকার আব্দুল মান্নান এখনও বহাল তবিয়তে শিরোনামে প্রকাশিত, বর্ষঃ ২৫, সংখ্যা- ১২, ১০ আগষ্ট ২০২০খ্রিঃ, ২৬শে শ্রাবণ ১৪২৭ বাংলায় পৃষ্ঠা নং- ৪৭ এ প্রকাশিত হয় এবং বিভিন্ন সময়ে অনলাইনে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
বাহাগিলী বসুনীয়াপাড়া গ্রামের মোবারক আলী বসুনীয়া জানায় আমার বড় ভাই আতাহার আলীকে ১৯৭১ সালে খান সেনাকে বাড়িতে নিয়ে এসে রাজাকার আবেদ হাজী ও রাজাকার আব্দুল মান্নান এর সামনে খান সেনা প্রত্যক্ষভাবে গুলি করে প্রকাশ্যে হত্যা করে। মোবারক আলী গত বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) ২০২১ইং তারিখে জানায় মান্নান রাজাকার বলে আমাদেরকে নাকি মদ,গাজা এবং মিথ্যা মামলা হয়রানি সহ রাস্তাঘাটে দেখা হলে মারপিট করে লাশ গুম করিবে ও বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করে বলে জানায়।
মোবারক আলী বসুনীয়া এ বিষয়ে গত ২৬-০৮-২০২০ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বাহাগিলী ইউনিয়ন পরিষদের ০৯নং ওয়ার্ড ইউ,পি সদস্য মোঃ মোরাদ হোসেন বলেন, আবেদ হাজী রাজাকার ছিলো ও তার ছেলে আব্দুল মান্নান রাজাকার এবং তাদের বাড়িতে খান সেনাদের অবস্থান ছিলো বলে জানায়। বাহগিলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান শাহ্ (দুলু) কে একাধিক বার ফোনে কল দিলে রিং হয় কিন্তু ফোন রিচিভ করেনি। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি এরকম কাগজ পাইনি দেখি থানায় যাই ওহাব এসআই কে জিজ্ঞাসা করি আপনি ওহাবকে ফোন দিয়েন। এসআই ওহাব আলী জানান, অভিযোগ কারীর পক্ষে আমি চার পাঁচ জনের স্বাক্ষী নিয়েছি তদন্ত চলছে জাছাই বাছাই চলছে।